Tuesday, July 2, 2013
সংগৃহীত
এক
মহিলা তার পরিবারের জন্য প্রতিদিন রুটি বানাত এবং একটা অতিরিক্ত রুটি এক
কুঁজোর জন্য বানিয়ে জানালায় রেখেদিত। কুঁজো প্রতিদিন রুটিটা নিয়ে যেত। সে
কৃতজ্ঞতা জানানোর বদলে বিরবির করে ... বলত ' খারাপ কাজ নিজের কাছে রয়ে যায়
কিন্তু ভাল কাজ উপহার হয়ে ফিরে আসে।' মহিলা তার উপর বিরক্ত হত কারন সে কোনো
দিন কৃতজ্ঞতা জানাতনা। কিন্তু তার পর অ মহিলাটি কুঁজোর জন্য রুটি রাখত। আর
কুঁজো ও সবসময় বিড়বিড় করে একই কথা বলত। এভাবে চলতে চলতে মহিলাটি একসময়
কুঁজোর উপর বিরক্ত হয়ে উঠে। ঠিক করল পরের দিন রুটির সাথে বিষ মিশিয়ে দিবে।
ভাবনামত পরের দিন রুটির সাথে বিশ মিশিয়ে জানালায় রেখে দিল। কিন্তু তার মনে
বার বার অনুশোচনা হতে থাকল। তাই সে বিষ মিশানো রুটিটা ফেলে দিয়ে নতুন একটা
রুটি রাখল জানালায়। কুঁজো এসে রুটি নিয়ে চলে গেল। যাওয়ার সময় বিড়বিড় করে
বলল' খারাপ কাজ নিজের কাছে থেকে যায় কিন্তু ভাল কাজ উপহার হয়ে ফিরে আসে।'
অপর দিকে মহিলার ছেলে অন্য শহরে গিয়েছিল কাজের খুঁজে। ৪-৫ মাস ধরে তার কোনো
খুঁজ নাই। ছেলের জন্য মহিলাটি প্রতিদিন দুয়া করত।ওইদিন হঠাৎ মহিলা তার
দরজায় নক শুনতে পেল। দরজা খুলে দেখল তার
ছেলে দরজায় দাঁড়িয়ে আছে। তার ছেলের অবস্তা ছিল খুব করুন। সে ছিল খুব
ক্ষুধার্ত আর রুগ্ণ। তার পরনের কাপর ছিল ছেঁড়া। সে তার মাকে জড়িয়ে ধরে কেদে
উঠল এবং বলতেলাগল
" আমি হয়ত আজ ফিরতে পারতাম না। আমার শরীরে এক বিন্দু শক্তি ছিল না। এক কুঁজোকে অনুরোধ করায় সে আমাকে একটু রুটি দিয়ে বলল 'পতিদিন এই
একটা রুটি খেয়ে আমার দিন কাটে। কিন্তু আজকে তোমার আমার চেয়ে বেশি দরকার।
এইটা তুমি নাও।' সেই রুটি খেয়ে আজ আমি বাড়ি ফিরলাম।"মহিলাটি র বুঝতে বাকি
রইল না যে রুটিটা তার হাতের বানানো এবং ঐ কুঁজোটাই রুটিটা তার ছেলেকে
দিয়েছিল। তখন মহিলার মনে পড়ল বিষ মিশানো রুটির কথা। যদি সে সেটা ফেলে না
দিত তাহলে তার ছেলে আজ মারা যেত। সে সৃষ্টিকর্তার নিকট হাজারো বার কৃতজ্ঞতা
জানাল।
শিক্ষণীয়: খারাপ কাজ নিজের কাছে থেকে যায় কিন্তু ভাল কাজ উপহার হয়ে ফিরে আসে।
(সংগৃহীত)
আ.জা
আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত:
এক ব্যক্তি একটি মাঠে অবস্থান করছিল। এমন সময় সে মেঘের মধ্যে একটি শব্দ
শুনতে পেলঃ ‘অমুকের বাগানে পানি দাও’। অতঃপর মেঘমালা সেই দিকে সরে গেল এবং
এক প্রস্তরময় স্থানে বৃষ্টি বর্ষণ করল। তখন দেখা গেল, সেখানকার নালাগুলোর
মধ্যে একটি নালা সমস্ত পানি নিজের মধ্যে ঢুকিয়ে নিল। তখন সে ব্যক্তি পানির
দিকে এগিয়ে গেল এবং দেখল যে, এক ব্যক্তি তার বাগানে দাঁড়িয়ে সেচযন্ত্র
দ্বারা পানি সেচ দিচ্ছে। তখন সে তাকে জিজ্ঞেস করল, ‘হে আল্লাহর বান্দা!
তোমার নাম কি?’ ব্যক্তিটি জবাবে বলল, ‘আমার নাম অমুক’- যে নাম সে মেঘের
মধ্যে শুনেছিল।
তখন লোকটি বলল, ‘হে আল্লাহর বান্দা! তুমি কেন আমার নাম
জিজ্ঞেস করলে?’ সে বলল, ‘এই পানি যেই মেঘের তাঁর মধ্যে আমি একটি শব্দ
শুনেছি যে, তোমার নাম করে বলা হয়েছে, অমুকের বাগানে পানি দাও! (হে আল্লাহর
বান্দা, বল) তুমি তা দ্বারা কি কি কাজ কর?’
সে উত্তরে বলল, ‘যখন তুমি এ
কথা বললে তখন শুনো, এই বৃষ্টির পানিতে যা উৎপাদন হয়, তার প্রতি আমি
দৃষ্টিপাত করি এবং তা ভাগ করি। এক ভাগ দান করি, এক ভাগ আমি ও আমার পরিবার
খাই এবং অপর ভাগ জমিতে লাগাই।
-(মুসলিম, হাদীস নং-২৯৮৪)
আ.জা
রাসূলুল্লাহ (সাঃ)
বলেনঃ আমি জান্নাতে প্রবেশ করলাম,
অতঃপর সেখানে কুরআন তিলাওয়াত
শুনতে পেলাম।
জিজ্ঞেস করলাম, এই
ব্যক্তি (তিলাওয়াতকারী) কে?
ফেরেশতাগণ বললেন, হারিসা ইবন নুমান
(রাঃ)।
(রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম
সাহাবায়ে কেরামকে লক্ষ্য করে বললেনঃ)
পুণ্যের প্রতিদান এরূপই। সে ছিল তার মায়ের
সাথে সর্বাপেক্ষা সদাচরণকারী।
ইয়ামেনে উওয়াইস করনী নামে একজন মুসলমান
বাস করতেন। মায়ের খেদমতে মশগুল
তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে সাক্ষাৎ
করতে পারেননি। কিন্তু মায়ের খেদমতের
বদৌলতে আল্লাহর দরবারে তাঁর মর্যাদা ছিল
অনেক ঊর্ধ্বে। তিনি ছিলেন মুসতাজাবুদ
দাওয়াত। অর্থাৎ তাঁর দুআ কবুল করা হতো।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উমার (রাঃ)-এর
উদ্দেশ্যে বলেন, সম্ভব হলে তাকে তোমার
জন্য ক্ষমা প্রার্থনার অবেদন করবে।
উমার (রাঃ)- এর যুগে ইয়ামেনের
একটি সাহায্যকারী দলের সাথে তিনি খলিফার
দরবারে আসেন। উমার (রাঃ) তাঁর নিকট দুআ
চাইলে তিনি তাঁর জন্য দুআ করেন। মায়ের
খেদমতের সুবাদেই তিনি এ মর্যাদা লাভ
করেন।
(এ বর্ণনা তিনটি হাদিসের সার-সংক্ষেপ।
দেখুন, সহিহ মুসলিম, কিতাবু ফাযায়িলিস
সাহাবা। হাদিস নং২২৩,২২৪,২২৫)
হযরত আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কে বলতে শুনেছি:
আল্লাহ্ তা'আলা বলেছেন: হে আদম সন্তান! যতক্ষণ পর্যন্ত তুমি আমাকে ডাকবে
এবং আমার কাছে (ক্ষমা) চাইবে, তুমি যা করেছ তা আমি ক্ষমা করে দেব, আর আমি
কোন কিছুর পরোয়া করি না। হে আদম সন্তান! তোমার গোনাহ্ যদি আকাশ সমান হয়ে
যায় আর তুমি আমার কাছে ক্ষমা চাও, তাহলে আমি তোমাকে ক্ষমা করে দেব। হে আদম
সন্তান! যদি তুমি পৃথিবী প্রমাণ গোনাহ্ নিয়ে আমার কাছে আস এবং আমার সঙ্গে
কোন কিছুকে শরীক না করে দেখা কর, তাহলে আমি সমপরিমাণ ক্ষমা নিয়ে তোমার
সঙ্গে দেখা করবো।
-(তিরমিযী , হাদিস নং-৩৫৪০)
আ.জা
Subscribe to:
Comments (Atom)